পড়া মনে রাখার ৫ টি বৈজ্ঞানিক কৌশল
১. বিরতি নিয়ে রিভিশন
জার্মান মনােবিদ হারমান এবিনঘসের মতে, কোনাে কিছু পড়ার এক ঘণ্টা পর সেটির মাত্র ৪৪ শতাংশ আমাদের মনে থাকে। তাই আমাদের উচিত তাৎক্ষণিক রিভিশন না দিয়ে, একটু বিরতি দিয়ে একই বিষয় আবার পড়া। অতে পড়া মনে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিরতি দিয়ে বারবার পড়লে যে কোনাে পড়াই মনে থাকে অনেক দিন।
২. ফাইনম্যান পদ্ধতি
পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। কোনাে কিছু খুব সহজভাবে অন্যকে বােঝানাের পদ্ধতিকে ফাইনম্যান পদ্ধতি বলা হয়। যে কোনাে কিছু পড়ার পর তা অন্য কাউকে শেখানাের চেষ্টা করলে সেই পড়া আপনার মনে থাকার সম্ভাবনা বেড়ে যায় কয়েক গুণ।
কোনাে কিছু শেখানাের সময় আপনাকে সেই পড়াটি নিজের মতাে গুছিয়ে সংক্ষেপ করে নিতে হয়; করতে হয় আলােচনাও। যা পড়াটি আপনার মাথায় গেঁথে যাওয়ার ক্ষেত্রে দারুণ ভূমিকা রাখে।
৩. পােমােডােরাে পদ্ধতি
পড়াশােনার মাঝখানে মুঠোফোন হাতে নিয়ে ফেসবুক,ইউটিউবে টু দেওয়া কিংবা অন্যমনস্ক হয়ে যাওয়া আমাদের এক নিত্য সমস্যা। যার ফলে পড়াশােনায় ব্যাঘাত ঘটে এবং পড়া ঠিকমতাে না হওয়ায় তা মনে থাকার সম্ভাবনাও বেশ কমে যায়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পােমােডারাে পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। এটি মূলত সময় ব্যবস্থাপনার একটি কৌশল। ১৯৮০ সালের শেষের দিকে ফ্র্যাঞ্চেঙ্কো নামের এক উদ্যোক্তা এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। ইতালীয় শব্দ পমােডােরাে অর্থ টমেটো সস'। ফ্রাঞ্চেস্কোর টমেটোর আকারের টেবিল ঘড়ি থেকেই মূলত এর নামকরণ।
এই পদ্ধতিতে একজন মানুষ মােট ২৫ মিনিট সময়
নিয়ে কোনাে একটি কাজ করবেন এবং কাজ শেষে ৫ মিনিটের বিরতি নেবেন। ওই পঁচিশ মিনিট নিজেকে অন্য সবকিছু থেকে দূরে রাখতে হবে। আর বিরতির পাঁচ মিনিটকে বেছে নিতে হবে অন্য যে কোনাে কাজ কিংবা বিশ্রামের জন্য। এতে করে মূল কাজের প্রতি মনােযােগ বাড়ে,কাজের প্রভাবও বেড়ে যায় কয়েক গুন। এই পদ্ধতি পড়াশােনায় প্রয়ােগ করলে পড়া হবে আরও কার্যকর, আর মনেও থাকবে লম্বা সময় পর্যন্ত।
৪. প্রয়ােজন পর্যাপ্ত ঘুম
যুক্তরাষ্ট্রের নটর ডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের মনােবিজ্ঞানী
জেসিকা পেইন এবং তাঁর কয়েকজন সহকর্মী মিলে একটি গবেষণা করেছেন। তাতে জানা যায়, পড়াশােনা শেষে নির্দিষ্ট সময় ঘুমালে তা পড়া মনে রাখায় বেশ সহায়তা করে। তাই লম্বা সময় পড়াশােনার পর কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই। যারা সারা রাত জেগে সকালে পরীক্ষা দিতে অভ্যস্ত, অনেক সময় দেখা যায় তাদের পরীক্ষা খারাপ হয়। এ গবেষণা থেকে নিশ্চয়ই এর কারণ বােঝা যায়।
৫. নেমােনিক পদ্ধতি
অনেক ছােট তথ্য মনে রাখার ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি
বেশ জনপ্রিয়। ছড়া, গল্প, ছবি, ইত্যাদির মধ্যে তথ্য যুক্ত করে মনে রাখাকে আরও সহজ করাই হচ্ছে এই পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্য। মূলত ভােকাবুলারি, বিভিন্ন সাল কিংবা যে কোনাে ছােট তথ্য মনে রাখার ক্ষেত্রে এই কৌশল হয়ে উঠতে পারে বেশ কার্যকর।